গ্র্যান্ড ট্রাঙ্ক রোড

এশিয়ার প্রাচীন ও দীর্ঘতম সড়ক এ আজম বা গ্রান্ড ট্রাঙ্ক রোড। সুপ্রাচীন এই সড়কটি দক্ষিণ এশিয়ার অন্তত ৩টি দেশে ব্যবহূত হইতেছে এশিয়ান হাইওয়ে হিসেবে। ইহা শের শাহ সড়ক নামেও পরিচিত। বাংলাদেশের চট্টগ্রাম হইতে ঢাকার সোনারগাঁ হইয়া যশোর হইতে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের হাওড়া ও পাকিস্তানের পেশোয়ারের মধ্য দিয়া আফগানিস্তানের কাবুল পর্যন্ত বিস্তৃত এই সড়কটি।

শের শাহর তত্ত্বাবধানে নির্মিত মোট আড়াই হাজার কিলোমিটার দীর্ঘ এই সড়কটি সেই সময় উপমহাদেশের পূর্ব ও পশ্চিম অংশকে সংযুক্ত করিয়াছিল এবং প্রধান সড়ক হিসেবে ব্যবহূত হইত। সড়কটি কেন্দ্র করিয়া গড়িয়া উঠিয়াছে বিভিন্ন জনপদ, নগর ও ব্যবসা কেন্দ্র। শের শাহ এই সড়কের ধারে নির্দিষ্ট দূরত্বে সরাইখানা, মসজিদ, মন্দির প্রতিষ্ঠা ও সরাইখানা করিয়া সামাজিক যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি সাধন করেন।



উল্লেখ্য, শের শাহ ছিলেন ভারতবর্ষের সম্রাট ও শুর বংশের প্রতিষ্ঠাতা। ১৫৩৭ সালে মোগল সম্রাট হুমায়ুনের সেনানায়ক হিসেবে শের শাহ বাংলা জয় করেন। ১৫৪১ থেকে ১৫৪৫ সালের মধ্যে মাত্র পাঁচ বত্সরের শাসনামলে শের শাহ মৌর্য যুগের প্রাচীন সড়কটি সংস্কার ও সম্প্রসারণ করিয়া ‘সড়ক এ আজম’ নামকরণ করেন এবং কাবুল হইতে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম পর্যন্ত এক সুতায় গাঁথিয়া দেন। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসনামলে সড়কটির নাম পরিবর্তন করিয়া গ্র্যান্ড ট্র্যাংক রোড রাখা হয়।

বর্তমানে ভারত, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানে শের শাহর নির্মিত এই সড়কটি এশিয়ান হাইওয়ে হিসেবে ব্যবহার হইতেছে।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url